তাওয়াং উপত্যকার আদিবাসী মনপা
কমলবিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়
ভুটানের পূর্বদিকে যে পার্বত্যভূমি আছে তা কামেঙ্ নামে পরিচিত। অরুণাচল প্রদেশের এই কামেঙ্ বিভাগের উত্তরে তিব্বত-অধিত্যকা, দক্ষিণে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা, পূর্বে সুবনসিরি বিভাগ আর পশ্চিমে অবশ্যই ভুটানের পর্বতমালা। কামেঙ্ বিভাগের উত্তর-পূর্বদিকে প্রায় দশ হাজার ফুট উচ্চতায় এক চমৎকার উপত্যকার নাম তাওয়াং। এখানে বসবাস করে মনপা উপজাতি। তাওয়াং ছাড়াও পশ্চিম কামেঙ্-এর বিভিন্ন অঞ্চলেও এদের বসবাস করতে দেখা যায়। অঞ্চলভেদে মনপাদের জীবনযাত্রায় সামান্য তফাৎ থাকলেও এরা একই উপজাতির মানুষ। তবে মনপারা পরিচিত হয় নিজ নিজ এলাকার নামানুসারে। যেমন পশ্চিম কামেঙ্-এর চুঙ্হিলের বাসিন্দাদের বলা হয় মনপা চুঙ্পা, কালাকাতাঙ্-এর মনপাদের বলা হয় মনপা কালাকাতাঙ্ বা মনপা তাঙ্লা, ডিরাঙ সার্কেলে গেলে দেখা মিলবে মনপা ডিরাঙ্দের সাথে, লিসের অধিবাসীদের যেমন বলা হয় মনপা লিসপা তেমন তাওয়াং-এর মনপাদের বলা হয় মনপা তাওয়াং।
মনপারা মঙ্গোলয়েড। এদের দৈহিক গঠনে মঙ্গোলিয়ানদের সঙ্গে অনেক সাদৃশ্য আছে। এদের গাত্রবর্ণ পীত। চোখ মঙ্গোলিয়ানদের মতো ভাঁজযুক্ত। চেহারা লম্বাটে। এদের নিজস্ব ভাষা বলতে বোঝায় ইন্দো-চিনি ভাষা। তবে সময়ের সাথে সাথে এদের দৈহিক গঠন ও শিক্ষা-সংস্কৃতিতে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে।
দশ থেকে বারো হাজার ফুট উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে মনপাদের বসভূমি। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে শীত অতি প্রচণ্ড। গ্রামগুলি দেখতে ছবির মতো। গ্রামের রাস্তার বাঁকে বাঁকে নজরে পড়বে ‘মানে’ ও ‘চোতেন’। ‘মানে’ হল দশ থেকে কুড়ি ফুট লম্বা, দুই থেকে তিন ফুট চওড়া এবং ছয় থেকে আট ফুট উঁচু একটি পাথরের দেওয়াল। এই দেওয়ালের গায়ে খোদাই করা থাকে পবিত্র উক্তি—ওম মণি পদ্মে হুম্, ওম মণি পদ্মে হুম্, ওম মণি পদ্মে হুম্….অসংখ্যবার। ‘চোতেন’ হল ছোট আকারের স্তূপাকৃতি যেখানে মাঝে মধ্যে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। গ্রামে ঢোকার প্রধান প্রবেশ পথে ‘মানে’ থাকাটা একরকম আবশ্যিক। চলার পথে ‘মানে’ কে যতটা সম্ভব ডানদিকে রেখে চলার চেষ্টা করে গ্রামবাসীরা। তাছাড়াও গ্রামের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পাওয়া যায় প্রার্থনা-পতাকা ‘কানসিঙ’ ও কাগজের উপর মন্ত্রলিখিত কাঠের রোলারের তৈরি ‘লাখির’।
ছোট ছোট পাহাড়ের উপর ছবির মতো দাঁড়িয়ে থাকা মনপাদের বাড়িগুলি সাধারণত দোতলা হয়ে থাকে। পাথর এবং কাঠ দিয়ে তৈরি এই বাড়িগুলির মেঝে থাকে কাঠের। দোতলায় বসবাস করার জন্য কয়েকটা ঘর থাকে। সুন্দর নক্সা কাটা দরজা ও জানালা থাকে সেসব ঘরে। নিচের তলাটি সাধারণত গৃহপালিত পশু রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়। গৃহ সরঞ্জামের বেশিরভাগ জিনিসই হয় কাঠ বা বাঁশের তৈরি।
মনপাদের পোষাক-পরচ্ছদ অত্যন্ত পরিপাটি। স্ত্রী-পুরুষ উভয়েই প্রায় একই ধরনের জামাকাপড় পরে। প্রচণ্ড শীতের দেশ বলে এরা প্রায় সবসময়েই গরম পোষাক পড়ে থাকে। ছেলেদের গায়ে থাকে ঢিলেঢালা হাঁটু পর্যন্ত লম্বা জামা— ‘চুবা’। মেয়েদের গায়েও প্রায় একই ধরনের জামা থাকে, তবে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত। এদের বলা হয় ‘সিনকা’। মেরুণ রঙের পোষাকই এরা বেশি ব্যবহার করে। ‘ম্যাডার’ নামে এক ধরনের লতানে গাছের শিকড় থেকে এই রং তৈরি হয়। এছাড়াও পুরুষেরা ব্যবহার করে উলের কোট ‘আলিফুদুম’ ও উলের ট্রাউজার ‘ডোরনা’। মেয়েরা যে কোট ব্যবহার করে তাকে বলা হয় ‘টোটুঙ্গ’। কোমরে থাকে রেশমী ফিতে ‘মুখক’ ও ‘কিচিন’। স্ত্রী, পুরুষ উভয়েই মাথায় পরে ফেল্টের টুপি। ছেলেদের চুল ছোট ছোট করে কাটা থাকে। তবে মেয়েরা লম্বা চুল রাখে এবং তা বিনুনি করে বাঁধা থাকে। মেয়েরা গয়না পরতে খুব ভালোবাসে। রুপো ও রঙিন পুঁতি দিয়ে তৈরি নানা রকমের গয়না, যেমন গলার হার, কানের দুল ইত্যাদি এদের খুব প্রিয়। পোষাকের অঙ্গ হিসেবে ছেলেরা কোমরে রাখে কাঠের খাপে ঝোলানো একটা ছোট তলোয়ার। মনপারা পায়ে জুতো পরে। জুতোগুলি প্রায় পুরো পা-টাই ঢেকে রাখে।
পার্বত্যভূমিতে বসবাসকারী মনপাদের প্রধান জীবিকা কৃষিকাজ। পাহাড়ের ঢালে ‘টেরেস চাষ’ পদ্ধতিতে কিছু ধান চাষ করলেও প্রধাণত এরা জুম পদ্ধতির মাধ্যমে চাষ করে উৎপন্ন করে আসুম (ভুট্টা), কোডো (বাজরা), নার (বার্লি), সাকপা (ডাল), সোল (লঙ্কা) ইত্যাদি। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এখনও এদের মধ্যে বিনিময় প্রথা বিদ্যমান। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বসবাসকারী উপজাতিদের মধ্যে আপাতানিদের মতো মনপারাও চাষবাসের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে লাঙলের ব্যবহার করে আসছে।
দূর্গম পার্বত্য অঞ্চলে বসবাস করলেও বর্তমানে উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থার ফলে ব্যবসার খাতিরে মনপারা মাঝে মাঝেই আসাম এবং বাংলায় চলে আসে। সঙ্গে আনে হাতে বোনা কার্পেট। এদের ঘরে ঘরে তাঁতশিল্প। কোনও মনপা নারী তাঁত চালাতে জানেনা এরকম ঘটনা ওদের ইতিহাসে নেই। সারা দিনে নানা কাজকর্মের ফাঁকে প্রত্যেক মনপা মেয়েই কিছুক্ষণের জন্য হলেও তাঁত চালাবেই। আর তারই ফলে তৈরি হয় সুন্দর সুন্দর নকশা করা কার্পেট যা আজ বিদেশের বাজারে সমাদৃত। মনপা পরিবারে মেয়েরাই তাঁত বোনে। তবে একাজে কোনও প্রথাগত শিক্ষা এদের নেই। বাড়ির বড়দের কাছ থেকেই ছোটরা শিখে নেয়। এই পদ্ধতি চলে আসছে আবাহমান কাল ধরে। এক সময় কার্পেট বোনা হত শুধু নিজেদের প্রয়োজনের জন্য। তবে বর্তমানে সহকারী পেশা হিসেবে এই বয়ন শিল্পকে কাজে লাগানো হচ্ছে। আর এর জন্য এরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বিভিন্ন জেলায় সরকারি উদ্যোগে স্থাপিত কারুশিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে। এরা যে কার্পেট বোনে সাধারণত তা তিন প্রকারের— খাটান, থৃসুটান ও মাকসুমাকটান। প্রত্যেক শ্রেণীর কার্পেটেই থাকে রঙ-বেরঙের নকশা। কার্পেটের এই শ্রেণী বিভাগ ও নকশা নির্ভর করে সেটি কোন কাজে ব্যবহৃত হবে তার উপর। এইসব কার্পেটে যে রঙ ব্যবহৃত হয় তা তৈরি হয় স্থানীয় গাছপালা থেকে।
নৃতত্ত্ববিদদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন কোনও এক অতীত সময়ে বৌদ্ধধর্মাবলম্বী মনপারা ভুটান ও সিকিমের ভিতর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। আদিবাসীদের উৎপত্তি নিয়ে বিভিন্ন উপজাতিদের মধ্যে নানারকম গল্পের প্রচলন আছে। মনপাদের জীবনধারায় সেরকম কোনও গল্প শোনা যায় না। মনপারা শুধু ধার্মিকই নয়, অত্যন্ত স্নেহ বৎসল। ধর্মের উপদেশগুলি যেন এদের রক্তের সঙ্গে মিশে আছে। অহিংস, সৎ ও শান্ত স্বভাবের এই উপজাতিটি সম্বন্ধে গবেষক ড. ভেরিয়ার এলউইন বলেছেন, “the might have little theology but have a great deal of religion.”
বৌদ্ধধর্মাবলম্বী মনপাদের প্রতিটি গ্রামেই থাকে একটি করে বৌদ্ধ মঠ। তবে তাওয়াং শহরের মঠটি সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ভারতের বৃহত্তম এই বৌদ্ধ মঠ মনপাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক জীবনের প্রাণকেন্দ্র। প্রায় সাড়ে তিনশ বছরের পুরোনো এই মঠটি দেখতে অনেকটা গিরিপৃষ্ঠে দুর্গের মতো। বিশাল এই মঠে বসবাস করে প্রায় পাঁচশ লামা। মঠের মূল ভবনটি তিনতলা যার একতলায় আছে বিশাল বৌদ্ধ মূর্তি। আছে গ্রন্থাগার, দেওয়াল জুড়ে শোভা পাচ্ছে নানা দেবদেবী ও সাধুসন্তদের ছবি। এই গ্রন্থাগারটিতেই আছে বিখ্যাত গ্রন্থ ‘গেটোম্পা’। আটটি বিশাল খণ্ডে রচিত এই দুর্লভ গ্রন্থটির তিনটি খণ্ড স্বর্ণাক্ষরে লেখা।
ধার্মিক মনপারা বিশেষ সৌজন্যপূর্ণ, ভদ্র ও বন্ধুভাবাপন্ন। অতিথিদের সঙ্গে কথা বলার সময় মাথা থেকে টুপি খুলে নেয় এবং সামনে ঝুঁকে সৌজন্যবোধের পরিচয় দেয়। কখনও কখনও এরা জিভ বের করে স্বাগত জানায়। মাখন ও নুন মেশানো তিব্বতী চা দিয়ে শুরু হয় এদের অতিথিসেবা।
পিতৃকেন্দ্রিক পুরুষশাসিত মনপা সমাজে সম্পত্তির অধিকারি শুধু ছেলেরা। তবে ছেলেদের মধ্যে কেউ লামা হলে সম্পত্তির উপর তার কোনও অধিকার থাকে না।
বর্তমানে মনপা সমাজে বহু বিবাহের প্রচলন নেই। তবে বিয়ের কোনও নির্দিষ্ট বয়স না থাকায় অনেক সময় স্ত্রী স্বামীর চেয়ে বয়সে বড় হয়। সমাজে বিধবা বিবাহের প্রচলন আছে। বিশেষত বড় ভাই মারা গেলে দেবরের সঙ্গে বিধবা বৌদির এবং স্ত্রী মারা গেলে শালির সঙ্গে ভগ্নিপতির বিবাহতে কোনও বাধা নেই। নিঃসন্তান বিধবারা ভাইদের অনুমতি নিয়ে অন্য কোনও পুরুষকে বিবাহ করতে পারে তবে সেক্ষেত্রে পুরুষটিকে কন্যাপণ ফেরৎ দিতে হয়। সমাজে বিবাহ-বিচ্ছেদ স্বীকৃত হলেও মনপাদের মধ্যে এর রেওয়াজ খুব একটা দেখা যায় না। এর প্রধান কারণ যে পক্ষ বিবাহ-বিচ্ছেদ চায় তাকে প্রচুর ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। মনপাদের মধ্যে গোত্র বিভাগ আছে।
মাখন ও নুন মেশানো চা মনপাদের অতি প্রিয়। দুধ খেতেও এরা খুব ভালোবাসে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ঘি, মাখন এবং দুগ্ধজাত খাবার কিছু না কিছু থাকেই।
গ্রামের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ভার থাকে গ্রাম সভার উপর। গ্রাম সভার প্রধান সাধারণত গ্রামের মুখিয়াই হন। তবে যে কোনও যোগ্য ব্যক্তিই এই পদে আসীন হতে পারেন। অপরাধীদের সাজা হয় অত্যন্ত কঠিন।
মৃতদেহ সৎকারের ক্ষেত্রে মনপাদের মধ্যে চারটি পদ্ধতি প্রচলিত আছেঃ
(১) মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে নদীর জলে ভাসিয়ে দেওয়া।
(২) উত্তর অরুণাচলে খরপোচাং নামে একটি জায়গায় মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে রেখে আসা।
(৩) দাহ করা।
(৪) কবর দেওয়া।
সুবিধা মতো এরা যে কোনও একটি পদ্ধতি গ্রহণ করে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় কোনও নদীর তীরে মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে একশ আটটি টুকরো করে নদীর জলে ভাসিয়ে দিতে। ছোঁয়াচে রোগে কারও মৃত্যু হলে কবর দেওয়াই এরা যুক্তিযুক্ত বলে মনে করে। ধনী ব্যক্তিরা বেশিরভাগ সময় মৃতদেহ নিয়ে যায় খরপোচাং-এ। সেখানে একটি বড় পাথরের উপর সেটিকে রেখে আসে যাতে শকুনেরা ভক্ষণ করতে পারে। তবে শীতকালে প্রচণ্ড শীতের জন্য খরপোচাং-এ যাওয়া প্রায় অসম্ভব। তাই তখন কেউ মারা গেলে সৎকার করা হয় দাহ করে। বর্তমানে অবশ্য কবর দেওয়ার প্রতিই মনপাদের ঝোঁক বাড়ছে। মৃতদেহ সৎকারের পূর্বে কিছু পারলৌকিক ক্রিয়াকর্ম সম্পাদন করার জন্য মঠে সংবাদ দেওয়া হয়। সেখান থেকে কোনও লামা এসে আত্মার শান্তি কামনা করে ধর্মগ্রন্থ পাঠ করেন। তিনদিন শোক পালনের পর মৃত ব্যক্তির পরিবারের লোকেরা লামাদের খাদ্য ও পানীয় দ্বারা আপ্যায়িত করে।
আধুনিক সভ্য জগতের হাওয়া মনপা সমাজে ধীরে ধীরে প্রবেশ করছে। ফলে তাদের জীবনযাত্রায় নানা পরিবর্তন ঘটছে। শহরাঞ্চলে নারী, পুরুষ উভয়েই অফিস-কাছারিতে কাজ করছে। দৈনন্দিন জীবনে আধুনিকতার ছাপ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি অন্য উপজাতির সাথে বৈবাহিক সম্পর্কও স্থাপিত হচ্ছে। শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে তারা আজ অগ্রসর উপজাতিগুলির মধ্যে অন্যতম। তা সত্বেও এদের প্রাচীন ঐতিহ্যগুলি সমাজে এখনও বিদ্যমান। উৎসব-অনুষ্ঠানে এখনও প্রাচীন রীতিনীতি অনুসরণ করা হয়। বুদ্ধ পূর্ণিমা তিথিতে মনপারা খুশির উৎসবে মেতে ওঠে। মঠগুলিকে সুন্দরভাবে সাজানো হয়। তাওয়াং মঠের মন্দিরে সেদিন প্রজ্বলিত হয় সহস্রদীপ। রঙ মেশানো মাখন দিয়ে মেঝেতে আঁকা হয় সুন্দর সুন্দর আলপনা। মাখন দিয়ে তৈরি এক হাজার বুদ্ধ মূর্তি দিয়ে সাজানো হয় মন্দিরের মেঝে ও দেওয়াল। নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে থাকে নৃত্য, গীত ও অভিনয়। আজিলামু নৃত্য ও ইয়াক নৃত্য মনপাদের খুব প্রিয়। নৃত্যের সাথে বাজানো হয় শিঙা, ড্রাম ও বিশালাকৃতি করতাল। আজিলামু নৃত্যের মধ্য দিয়ে তিব্বতীয় রামায়নের কাহিনি পরিবেশিত হয়। এছাড়াও মনপাদের ‘সোনি-ইয়ালো’ বা ‘সিংহ-ময়ূর’ নৃত্যও করতে দেখা যায়। এসব নৃত্যের মধ্য দিয়ে তারা অতিথিদের স্বাগত জানায় নতুন বছরের (বৌদ্ধ মতে) ‘লোসার’ উৎসবেও। ইয়াক নৃত্য প্রকৃতপক্ষে একটি মুকাভিনয় যা মনপা সমজে খুবই জনপ্রিয়।
অভিনয়ের সময় মনপা শিল্পীরা নানা রঙের মুখোস ও জমকালো পোশাক পরে। যেসব অভিনয় মনপাদের সব থেকে বেশি আকৃষ্ট করে তাদের মধ্যে অন্যতম ‘থুতোতদাম’ অভিনয়। এই অভিনয়ের বিষয় বস্তু হল মৃত্যুর পরে আত্মার বিচিত্র অভিজ্ঞতা নৃত্য বা অভিনয় সবই অনুষ্ঠিত হয় তাওয়াং মঠের প্রাঙ্গনে বা স্থানীয় গুম্ফার সামনে।
শান্ত, ভদ্রশিষ্ট, নৃত্যগীতে পারদর্শী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মনপাদের রুচিবোধ প্রশংসনীয়।
…………….
No comments:
Post a Comment