পার্সি বিশি শেলি (Percy Bysshe Shelley): ১৭৯২ সালের ৪ই আগস্ট ইংল্যান্ডর সাসেক্সে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁকে ইংরেজি সাহিত্যে রোমান্টিক আন্দোলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কবিদের মধ্যে ভাবা হয়। ওজিম্যানডিয়াস, ওড টু দ্য ওয়েস্ট উইন্ড, টু দ্য স্কাইলার্ক, মিউজিক, হোয়েন সফট ভয়েসেস ডাই, দ্য ক্লাউড এবং দ্য মাস্ক অব এনার্কি তাঁর বিখ্যাত কবিতা।১৮২২ সালের ৮ জুলাই ইতালি উপকূলে একটি নৌকা দুর্ঘটনায় মাত্র ত্রিশ বছর বয়সে তিনি অকাল মৃত্যুবরণ করেন। অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত জীবনের অধিকারী এই মহান কবি নিজের সাফল্য ও স্বীকৃতি দেখে যেতে না পারলেও পরবর্তী তিন-চার প্রজন্মের কবি-সাহিত্যিকদের ওপরে তাঁর ছিল প্রচুর প্রভাব। পি.বি শেলীর কাব্যে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে এক শৈল্পিক কণ্ঠস্বরের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। তাঁর Ozymandias নামের কবিতায় মরুভুমির ধূ ধূ বালুকাবেলায়, ক্ষমতার সসীমতার প্রতিমুর্তি হয়ে কালের-গহবরে-হারিয়ে-যাওয়া এক অহংকারী সম্রাটের বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা ক্রুর, ভগ্ন-মূর্তির চিত্র আছে। এই প্রবল ক্ষমতাবান মিশরীয় ফারাওয়ের ভগ্ন-ভাস্কর্যের খবর কবিতার কথক শুনেছেন এক পরিব্রাজকের কাছ থেকে। ইতিহাসের ওজিম্যান্ডিয়াস পরিণত হয় ভাস্কর্যে, ভাস্কর্য রূপান্তরিত হয় ভগ্ন-মুর্তিতে, আর এই ভগ্ন মুর্তিটিরই সাক্ষাত পায় পরিব্রাজক এবং এই পরিব্রাজক খবর সরবরাহ করে কবিতার কথককে।আমরা পাঠকেরা কবিতার কথকের কাছ থেকে শুনি ওজিম্যান্ডিয়াস এর কথা। এইভাবে কয়েক স্তরের 'অস্তিত্ব' পার হয়ে ওজিম্যান্ডিয়াস ধরা পড়ে পাঠকের কাছে এক সুদূর শ্রুতির বিষয় হিসেবে, প্রায়-বিলীন এক স্মৃতি-খন্ড হিসেবে, এক গল্প-কথা হিসেবে। এইভাবে বয়ান-রীতির অনন্যতায় শেলী এক স্বৈরাচারী, দাম্ভিক সম্রাটকে ক'রে তোলেন শক্তিহীন, করুণার পাত্র, নিঃস্ব। যে ভাস্কর নির্মাণ করেছিলেন এই মূর্তি, তিনিও এই স্বৈর অবয়বে খোদিত করেছিলেন কুঞ্চিত ওষ্ঠ, কঠোর আদেশের ভঙ্গি। এভাবে এক নির্বিরোধ ভাস্কর্য-শিল্পীও এই অত্যাচারীকে কটাক্ষ করবার সুযোগ ছাড়েননি। তাছাড়াও, ওজিম্যান্ডিয়াসকে আর যে ভ্রুকুটি করে, সে হলো খোদ 'কাল'। তার পড়ে থাকা বিশাল দুটি ছিন্ন পা, বালিতে উপুড় হয়ে থাকা ভগ্ন-মুখমন্ডল, আর মূর্তির বেদি সাক্ষ্য দেয় স্বৈরশাসকের অনিবার্য পরিণতির। |
Ozymandias
Percy Bysshe Shelley
I met a traveller from an antique land,
Who said—“Two vast and trunkless legs of stone
Stand in the desert. . . . Near them, on the sand,
Half sunk a shattered visage lies, whose frown,
And wrinkled lip, and sneer of cold command,
Tell that its sculptor well those passions read
Which yet survive, stamped on these lifeless things,
The hand that mocked them, and the heart that fed;
And on the pedestal, these words appear:
My name is Ozymandias, King of Kings;
Look on my Works, ye Mighty, and despair!
Nothing beside remains. Round the decay
Of that colossal Wreck, boundless and bare
The lone and level sands stretch far away.”
ওজিম্যান্ডিয়াস
পার্সি বিশি শেলী
অনুবাদঃ শওকত হাসান
সাক্ষাৎ হয়েছিল এক পর্যটকের সাথে, প্রাচীন
এক দেশ ফেরা, সে বলেছিল, ---- প্রকান্ড,
ধড়হীন,
দুইটা পাথরের পা
ছিল দন্ডায়মান
মরুভুমির বুকে,
নিকটেই বালির মধ্যে শায়িত,
অর্ধ-প্রোথিত, চটাওঠা, যেন খুবলে খাওয়া একটা মুন্ডু,
যার মুখাবয়বে অবজ্ঞাসূচক শীতল চাহনি, ভ্রুকুটি,
আর কুঞ্চিত ওষ্ঠে স্পষ্ট, যে,
এর স্রষ্টা ভাস্কর সম্যক উপলব্ধি করে নিয়েছিলেন
তার চরিত্র
যা আজও মূর্ত প্রাণহীন ওই বস্তুনিচয়ে।
শিল্পীর হাত উপহাসে মূর্ত করে,
আপন হৃদয়-অনুভব;
বেদীতে উৎকীর্ণঃ
আমি ওজিম্যান্ডিয়াস, রাজাধিরাজ!
হে রাজন্যবর্গ!
অবলোকন কর আমার কীর্তিযশ
আর হতাশায় ফিরে যাও।
আজ বিশাল ধ্বংসস্তুপ ছাড়া সবই অদৃশ্য।
শুধু দৃশ্যমান
সীমাহীন দিগন্তে বিস্তৃত ...
নগ্ন,
ধূধূ,
নির্জন
বালিয়াড়ি।”
-----------
কবি পরিচিতিঃ-
শওকত হাসান। কুষ্ঠিয়া, বাংলাদেশ। ওপার বাংলার বিশিষ্ঠ কবি। বহু বিদেশি কবিতার অনুবাদক।
No comments:
Post a Comment