গল্পঃ সুন্দরের কাছে - সুমন মহান্তি



সুন্দরের কাছে


সুমন মহান্তি 



মোড়ের মাথায় ফলের দোকানে অজিত আপেলের দাম জিজ্ঞাসা করছেন। তমসা একদৃষ্টিতে দোকানে সাজানো ফলগুলো দেখছিল। কী সুন্দর করে সাজানো আছে আপেল, কলা, কমলালেবু, নাসপাতি। ঝুড়িতে থরে থরে সবুজ-হলুদ আঙুর রাখা আছে। এত সুন্দর করে প্রতিটি ফল সাজানো রয়েছে যে রাস্তা দিয়ে চলে যেতে যেতে একবার চোখে পড়বেই, মুহুর্তের জন্য থমকে যাবে পথচারী। তমসা আর সহ্য করতে পারল না। হাতে একটা আপেল তুলে নিয়ে রাস্তায় ফেলে দিল। আঙুরের ঝুড়িটাকে উলটে দিল এক ঝটকায়। নাসপাতির ঝুড়িও ফেলে দিল রাস্তায়। রাস্তায় ফলগুলো ছড়িয়ে পড়ল। রুদ্রমূর্তিতে তেড়ে এল দোকানদার, “এই মেয়ে, কী করলি তুই? সব তছনছ করে দিলি?’’

ততক্ষণে দোকানের চারপাশে ভিড় জমে গিয়েছে। অজিত অপ্রস্তুত, তাঁর গলা দিয়ে কোনো স্বর বেরোল না। মাথা নীচু করে বললেন, “ও এরকম কেন যে করল! ওর কাজের জন্য ক্ষমা চাইছি। ভাই, মাফ করে দাও।’’

“কেমন মেয়ে আপনার? শিক্ষাদীক্ষা দেননি কিছু? ওর মাথার গোলমাল আছে।’’

“ও এরকম নয়। বিশ্বাস করো ভাই। ঠিক আছে, আমিও কুড়িয়ে দিচ্ছি ফলগুলো।’’

“থাক দাদা। ও আমিই করে নিচ্ছি,” উবু হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা ফলগুলো কুড়িয়ে নিতে নিতে সে গজগজ করল, “এত সুন্দর করে সাজালাম সকালে। সময় লাগে দাদা। আবার আমাকে খাটতে হবে। সব পন্ড করে দিল আপনার মেয়ে। ছোট হলে কী হবে একেবারে হাড়ে-বজ্জাত মেয়ে।’’

অজিত বাড়িতে এসে তমসার গালে চড় কষালেন, “শয়তান মেয়ে, কেন করলি এমন? লোকের সামনে মান-ইজ্জত রইল না। কত কথা শুনতে হল। তোর জন্য এত অপমান হজম করতে হল!’’

তমসা নিরুত্তর।

অজিত রাগে আর একবার থাপ্পড় মারলেন মেয়ের গালে, “ বলতেই হবে তোকে। না বললে মেরেই ফেলব আজ।”

তমসার মধ্যে কোনো ভাবান্তর নেই।

“বলবি না?’’ রাগে চেঁচিয়ে ওঠেন অজিত।

“ইচ্ছে হল। তাই,’’ অম্লান বদনে তমসা বলল।

অজিত অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলেন। এত মারেও মেয়ে নির্বিকার, চোখে জল নেই, সামান্য অনুতাপের লক্ষণ পর্যন্ত নেই হাবেভাবে। মুখে ক্ষীণ হাসি লেগে আছে। ফলের দোকানে তছনছ করার পরেও তার চোখে হাসির ঝিলিক দেখেছিলেন তিনি। নেহাত দুষ্টুমি হলে মাফ করে দেওয়া যায়। এ তো একবারের জন্যও মুখ ফুটে বলছে না যে তার ভুল হয়ে গিয়েছে।

“ইচ্ছে! নষ্ট করার ইচ্ছে হল কেন তোর শুনি?’’

তমসা জেদি ভঙ্গিতে বলল, “বললাম তো ইচ্ছে হচ্ছিল। যা করেছি বেশ করেছি। আবার করব।’’

অজিত হতভম্ব হয়ে চেয়ারে বসে পড়লেন। মেয়েকে শাসনেই রাখেন, অকারণ প্রশ্রয় কখনো দেন না। টানাটানির সংসার, বেশি আদিখ্যেতার বালাই নেই, তমসার মা-ও আদর বা প্রশ্রয়ের বাড়াবাড়ি করে না। আদরে অনেক বাড়ির ছেলেমেয়েরা বিগড়ে যায়, জেদি হয়। এর কোনোটাই করেন না তাঁরা।

তবু এরকম হচ্ছে কেন? অজিত বিড়ি ধরিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যে আচ্ছন্ন হয়ে যেতে থাকেন। 


                                 #

বিকেলে বাড়িতে বাবা নেই, মা পাশের বাড়ির কাকিমার সঙ্গে গল্প করছে। তমসা দেখল এই তার সুযোগ। বাগানের রঙ্গন গাছটা থোকা থোকা লাল ফুলে ভর্তি, ভারী সুব্দর দেখাচ্ছে। তমসা বেশ কিছু ফুল হাতে করে ছিঁড়ে ফেলল। এতক্ষণে গাছটাকে কেমন আধন্যাড়া দেখাচ্ছে, মোটেই ভালো লাগছে না দেখতে। তমসার মুখে হাসি ফুটে উঠল, তৃপ্তি আর চাপা আনন্দে মন নেচে উঠতে চাইল। ছোটবেলা থেকেই এরকম করে বেশ আনন্দ পায় সে। ভালো কিছু দেখলেই তার মনে প্রবল ইচ্ছে জাগে। নষ্ট করে দিতে হবে, ভেঙে দিতে হবে, ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে দিতে হবেই। পার্কে সাজানো সুন্দর ফুলের বাগান দেখলে তার লন্ডভন্ড করে দিতে ইচ্ছে হয়। ধরা পড়ে যাবার ভয়ে তেমন করতে পারে না সেখানে।

এখন এই বারো বছর বয়সে সে বেশ বুঝতে পারে যে যাদেরকে সবাই গদগদ হয়ে সুন্দর বলে তারা আসলে তার শত্রু। যারা বলে তারাও শত্রু। তার জন্য তো এসব কিছুই নয়, তার কপালে এমন প্রশংসা জোটে না। তার চারপাশের ছোট পৃথিবীর যা কিছু ভালো সব যারা সুন্দর শুধু তাদেরই জন্য রাখা আছে। ফুটফুটে মিষ্টি বাচ্চা দেখলে লোকজন ভারী গদগদ হয়ে পড়ে। গাল টিপে দেয়, আদর করে। তাকে কেউ এভাবে আদর করে না।  বেশ মনে আছে তার। সে তখন ক্লাস থ্রি-তে পড়ত। শিশুদিবসের অনুষ্ঠান চলছে পাড়ার ক্লাবে। সে আরো অনেক বাচ্চার সঙ্গে বসেছিল। বড়রা এসে প্রত্যেককে আদর করল, কথা বলল। নাম জিজ্ঞাসা করে মজাটজাও করল। বাদ থাকল শুধু সে। তাকে কেউ আদর করে গাল টিপে দিল না, নাম জানতে চাইল না। সে এককোণে চুপচাপ বসে থাকল। কারোর যেন খেয়ালই নেই যে সে আছে। এখন সে বুঝেছে আসল কারণ। বুঝে ফেলেছে যে যা কিছু সুন্দর তা তার জন্য নয়, সেখানে তার কোনো অধিকারই নেই। সে থাকবে তার বাইরে। একা, সম্পূর্ণভাবে একা।


কাউকে তার আপন বলে মনে হয় না। শুধু ফুটপাতে বসে থাকা রুগ্ন ভিখারিদের বেশ চেনা আর আপন বলে মনে হয়। রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো পাগলদের দেখলে আপন ভাবতে ইচ্ছে করে। মাথায় জট, গা-ভর্তি নোংরা, গায়ে ছেঁড়া নোংরা পোশাক, হাতে ময়লা পুঁটলি বা ঝোলা, সব মিলিয়ে কেমন বিশ্রি আর গা-ঘিনঘিনে রূপ তাদের। তার তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। এরা তার শত্রু নয়। এদের কেউ সুন্দর বলে না, এদের দেখলে নাক সিঁটকোয়। রোববার শহরে কুষ্ঠরোগীরা দলবেঁধে ভিক্ষা করতে বেরোয়। সে দরজার কাছে ছুটে গিয়ে তাদের পয়সা দেয়। হেসে হাত নাড়ে। এদের ওপর তার একফোঁটা রাগও হয় না। বরং আপন মনে হয়। বুড়োবুড়িদের দেখলেও তার রাগ হয় না, ঘেন্না করার ইচ্ছে জাগে না। চামড়া কুঁচকে গেছে, গালে-কপালে অসংখ্য ভাঁজ, চামড়া অনেকের ঝুলে গেছে, চেহারা দেখলে করুণা হবে সবার। তার ওদের জন্য দুঃখ হয়। ইস, ওদের কেউ সুন্দর বলে না। মুগ্ধচোখে তাকায় না, প্রশংসা করে না। এরা বাদে পৃথিবীর সবাই তার শত্রু। 


                                   #

পাড়ার রুমাদির বিয়ে আজ। আপনজন লজে বিয়ের অনুষ্ঠান হবে। তাদেরও নেমন্তন্ন আছে। মা সন্ধ্যা থেকে সাজে ব্যস্ত। আলমারি খুলে নীল রঙের সিল্কের শাড়ি বের করেছে। একমাত্র বিয়ের অনুষ্ঠান হলেই মা শাড়িটা বের করে। খুব সাজের চেষ্টা চলছে। শস্তা একখানা লিপস্টিক বুলিয়েছে ঠোঁটে, চুলে ঘটা করে শ্যাম্পু করা হয়েছে দুপুরে স্নানের সময়ে। গলায়, ঘাড়ে, মুখে পাউডার বোলানো চলছে। তমসার গা গুলিয়ে যাচ্ছে। সে বারান্দায় বেরিয়ে আসে। নিজেকে সুন্দর দেখানোর জন্য কেমন বোকাসোকা চেষ্টা চালাচ্ছে মা, দেখে গা জ্বলে যাচ্ছে।

ওদিকে আরেকজন পাঞ্জাবি চড়িয়েছে গায়ে,পারফিউম ছড়াচ্ছে বারবার। দাড়ি কামিয়ে ফিটফাট, শৌখিন ভাব আনা হয়েছে। একজন রংচটা ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে নিজেকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে, আর একজন দাড়ি কামানোর শস্তা আয়নায় নিজের রূপ কতটা খোলতাই হল তা মাপছে। অসহ্য, কেউ যেন ওদের আগে দেখেনি, একদিন সেজেগুজে বাহার করে বেরোলেই ওদের রূপ বদলে যাবে! এইসব বিয়েবাড়ি-অন্নপ্রাশন নামের সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোয় কিছু মানুষের সাজের ঘটা দেখলে তার গা-পিত্তি জ্বলে যায়। হো- হো হাসিতে বিদ্রুপে ফেটে পড়তে ইচ্ছে করে।

তমসার যেতে ইচ্ছে করে না এসব অনুষ্ঠানে। না চাইলেও এইসব অনুষ্ঠানে তাকে যেতে হয়। বাবা-মা তাকে একা রেখে যাওয়া নিরাপদ মনে করে না। সে যেতে বাধ্য হয়। সে নিজে অবশ্য একটুও সাজে না। আয়নাতে নিজেকে দেখেও না, পারফিউম- লিপস্টিক-রুজ ইত্যাদির ধারেকাছেও যায় না। মা বেরোনর সময় ভুরু কুঁচকে বলল, “ আজকেও ঐ রোজকার পোশাকটাই পরলি?’’

তমসা ফোঁস করল, “কেন? যেমন রোজ দেখায় আমাকে, সবাই দেখে, তেমনটাই ভালো। একদিন ঢং করে সেজে  লোকের রুচি বদলাতে যারা চায় তারা হল ন্যাকা।’’

“তোর মনটাই বিশ্রি হয়ে যাচ্ছে। মুখে চ্যাটাং চ্যাটাং কথা। কী যে হচ্ছে তোর?’’

তমসা মুখ বাঁকিয়ে বলে, “আমি তো বিশ্রি। সুশ্রী হবার ঢং করি না। পরিচয় দিতে লজ্জা করলে দিয়ো না। বিয়েবাড়ি যাবার কোনো ইচ্ছেই আমার ছিল না। জোর করে টেনে নিয়ে যাচ্ছ নরকে।”

“বিয়েবাড়ি তোর নরক মনে হয়!’’

“তাছাড়া আর কী! সবাই দেখতে আর দেখাতে ব্যস্ত,” তমসা শ্লেষে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল, “নেহাত একটু ভালোমন্দ খাওয়া যায়। ঐজন্যই যাচ্ছি। ঘরে তেমন জোটে না। খাওয়ার সময়টা বাদে গা রি-রি করে আমার।’’

পূর্ণিমা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলেন। লম্বা শ্বাস টেনে বললেন, “বুবু, তোর দেখার চোখটা খুব বাজে।”

“চোখটা দেখতেও কিন্তু বাজে। শ্রীহীন চোখে সুন্দর কীভাবে দেখব বলো?’’ বিদ্রুপে শাণিত হল তমসার গলা, 

“চোখের চিকিৎসা করাবে নাকি এবার?’’

পূর্ণিমা পরের দিন একান্তে অজিতকে বললেন, “ বুবুর ব্যাপারটা মোটেই ভালো ঠেকছে না।’’

অজিত আধশোয়া অবস্থায় জানতে চান, “ কেন, কী হয়েছে?’’

পূর্ণিমা আগের রাতে বিয়েবাড়ি যাবার সময়ে মেয়ের হাবভাব, কথাবার্তা সবিস্তারে শোনালেন।

অজিত ভুরু কুঁচকে তাকালেন, “ হুম। এই বয়সটাই ওরকম। উদ্ধত, বেপরোয়া ভাব দেখায়।’’

পূর্ণিমা অসন্তুষ্ট হলেন, “ হেলাফেলা কোরো না। বুবুকে আমার কিন্তু একদম স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না।’’

“তাহলে কী করতে  হবে আমায়?’’

“ডাক্তার দেখাও।’’

“ডাক্তার?’’

“ঐ যে কীসব মনের রোগটোগ দেখে তেমন কাউকে দেখালে হয় না?’’

অজিত মাছি তাড়ানোর ভঙ্গিতে বলেন, “ ওগুলো হল বড়লোকদের বিলাস। একবার ওখানে গেলে কি হবে জানো? চারদিকে রটে গেলে ওর বিয়ে দেব কীভাবে? তাছাড়া পরীক্ষাতে রেজাল্ট ভালোই করছে। মনের রোগ হলে তা হতে পারত?’’

“তুমি গুরুত্ব দিচ্ছ না কেন?’’

অজিত রাগত ভঙ্গিতে বলেন, “একেই রোজগার কমে আসছে। টিউশনের বাজারে কম্পিটিশন। আমার বয়স হচ্ছে, বেকার ছেলেদের এনার্জির সঙ্গে পারছি না। বকে বকে আর শক্তি নেই তেমন। ঐসব ডাক্তার দেখানো, খরচা, পাব কোথায়? আবার বলছি, বুবু রেজাল্ট ভালো করছে। বয়সের দোষে ওরকম গরম গরম কথা অনেকেই বলে।’’


                                   #

দু’দিন বাদে রাতে শোবার আগে টি. ভি. দেখছিলেন অজিত। কলকাতার একটি কন্যাশিশুকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণ চেয়ে উড়ো ফোন এসেছিল। মুক্তিপণের টাকা পৌঁছনোর আগেই শিশুটিকে মেরে ফেলেছে আততায়ী। শিশুটির ছবি দেখাচ্ছিল বারবার। ফুটফুটে সুন্দর মেয়ে, দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। পূর্ণিমা ভেজা চোখে বললেন, “আহা রে! কী সুন্দর নিষ্পাপ বাচ্চা। একে মেরে ফেলল।’’

অজিত আফশোষ করে ওঠেন, “ইস। পিশাচ সব। এত সুন্দর ফুটফুটে বাচ্চাটাকে মেরে ফেলতে হাত কাঁপল না?’’

পাশেই বসেছিল তমসা। সে পা দোলাতে দোলাতে বলল, “ আমার তো ওদের ধন্যবাদ জানাতে ইচ্ছে করছে।’’

অজিত চমকে ওঠেন, “ কাদের ধন্যবাদ দিবি?’’

“যে বা যারা বাচ্চাটাকে মেরে ফেলেছে তাদের আনন্দে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে।’’

পূর্ণিমা বিস্ময়ে চেঁচিয়ে ওঠেন, “ আনন্দ হচ্ছে তোর?’’

তমসা  হাসল,  “আনন্দে নাচতে সাধ হচ্ছে। সুন্দর বাচ্চাটাকে মেরে ফেলেছে বলেই আনন্দ হচ্ছে। ভেতরটা জুড়িয়ে যাচ্ছে।’’

অজিত বিস্ফারিত চোখে চেয়ে থাকলেন। পূর্ণিমা নির্বাক, ঘোলাটে চোখে তাকিয়ে রইলেন শুধু। তমসা ছাদে উঠে দাঁড়িয়ে থাকল অনেকক্ষণ। একটু আগে বুকের মধ্যে অদ্ভূত আনন্দ বুদবুদ হয়ে ফেটে পড়তে চাইছিল। এখন সেই উচ্ছ্বাস যেন কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে। তার কান্না পাচ্ছে। প্রতিহিংসার প্রচন্ড আবেগে বুক জুড়িয়ে আসছিল, এখন খুব খারাপ লাগছে।  এতটা নীচে নেমে যাচ্ছে সে! ঘরের চার দেয়ালে যে কথা মুখ থেকে ছিটকে বেরিয়ে এল তা বাইরের লোকের কাছে  একবারের জন্যও  বলা চলে না। লোকে ছি-ছি করবে, থুতু ফেলবে ঘৃণায়।


মনের উথালপাথাল ভাব কমানোর জন্য তমসা রাতে টিভি-তে সিনেমা দেখতে বসল। কিছুক্ষণ দেখার পরেই আবার মনের মধ্যে বিস্বাদ অনুভূতি, রাগের কাঁপন শুরু হয়ে গেল। সুপুরুষ নায়ক, রূপসী নায়িকা। মিষ্টি প্রেমের গল্প এগোচ্ছে বেশ। দুটোকেই হাতের কাছে এই মুহুর্তে পেলে গলা টিপে খুন করেই ফেলত সে। ন্যাকামো চলছে!  পুরুষ জাতটার আছে কী? মেয়েদের শরীর আর সৌন্দর্য খোঁজা এক ইতর  প্রাণী ছাড়া কিছুই মনে হয় না তার। মেয়েগুলোও কম যায় না। পুরুষের নজরে পড়লেই ধন্য হয়ে যাবে, গদগদ হয়ে যাবে।  তার জন্য কত সাজগোজ, কত আয়োজন! পুরুষের মনোরঞ্জন করাটাকে প্রেম ভাবে। একেবারে নিকৃষ্ট এই মেয়েগুলো, তাদের কলেজেও আছে, দেখলে ঘেন্না করে। ওদের সঙ্গে মেশেই না সে। সাধারণ দেখতে মেয়ে, মন অন্যরকম, আত্মমর্যাদা আছে এমন কয়েরকজন মেয়ের সঙ্গেই তার ভাব আছে। মেয়েলি ন্যাকামো নেই, ছেলেদের সঙ্গে অবলীলায় টক্কর দিতে পারে।  কলেজে সাধারণ সাদামাটা মেয়েদের সে নেত্রী। তাদের সঙ্গে ঘোরে, পুরুষজাতির আদ্যশ্রাদ্ধ করে মনের আনন্দে।  সে সারসত্যটা তার গুটিকয় বন্ধুদের বোঝাতে পেরেছে। ওরা যেন ছেলেদের ঘৃণা করতে শেখে। ছেলেগুলো মেকি,বাইরে অনেক ভাব নিয়ে ঘোরে। মুখে দাড়ি, প্রগতিশীল বুলি, এদিকে মেয়েদের রূপ দেখলেই হামলে পড়ে ব্যাটারা। ঘুরেফিরে সেই মেয়েদের শরীর, আধিপত্য আর দখলদারি। সুন্দর দেখতে মেয়ে হলেই সব ভুলে যায়। 


তমসা তার অনার্স সাবজেক্ট বোটানি মন দিয়ে পড়ে, সিনেমা-গান-নাটক-সাহিত্য কিছুতেই তার রুচি নেই। ওগুলোয় সুন্দরের জয়গান ছাড়া আছেটা কী? তার চেয়ে অনার্সের বই আর ল্যাবরেটরি হল শান্তির আশ্রয়, মুক্তির আলো। ভালো রেজাল্টটা করেই তাকে প্রতিবাদ জানাতে হবে। ওটাই তার একমাত্র অস্ত্র, একমাত্র উপায়। ঐ অস্ত্র ভোঁতা যেন কখনো না হয়।

 

                                       #

সুগতকে তার এই ক’দিন বেশ ভালো লাগছে। তমসার চারপাশের জগতটাও যেন একটু একটু করে বদলাচ্ছে। সুগতর যে তাকে ভালো লাগছে এটা সে টের পাচ্ছে। অনেকে সবিস্ময়ে ‘তাই বলে তমসার মতো মেয়েকে’ বলেই বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। গুটিকয় বন্ধুরা খবর এনে দেয়। কে কী বলছে ঠিক পৌঁছে যায় কানে।

“কী জানি বাবা, ভালোলাগার কেমিস্ট্রি বোঝা মুশকিল।”

“তমসা মেয়েটা বেশ অ্যাগ্রেসিভ। তাই সুগতর হয়তো ওটা মনে ধরেছে।’’

“অফ বিট মেয়ে। অফ বিটের জন্য স্পেশাল আকর্ষণ থাকে বোধহয়।’’

তমসার মধ্যে ঘৃণার অনুভূতি কমে আসছে। না, সে অন্যদের এত ঘৃণা কেন যে করে! ঠিক নয় এরকম।  ধূসর পৃথিবী যখন রঙিন মনে হতে শুরু করেছে, আপন মনে গান গাইতে ভালো লাগছে তখনই তমসা খবরটা পেল। সুগত একটি জায়গায় টিউশন পড়াত। টুয়েলভে পড়া সে ছাত্রীটি পড়াশোনায় সাধারণ হলেও দেখতে বেশ সুন্দর। সুন্দর মুখ দেখেই মাথা ঘুরে গেল সুগতর। সে ছাত্রীও সুগতর মধ্যে কী দেখল কে জানে! সে নাকি সুগতকে ছাড়া বাঁচবে না। দুদিনেই  নাকি তার প্রেমে পাগল হয়ে গেছে সুগত। মরণ। এদের মরতে আর বাঁচতে বেশি সময় লাগে না। তার মানে সুগতর তাকে আদৌ ভালো লাগেনি। সুখাদ্য খেতে খেতে আলুসেদ্ধ-ভাতে খানিকটা মুখের স্বাদ বদলানোর ইচ্ছে হয়েছিল তাহলে! নিজের ওপর ধিক্কারে ভরে গেল তমসা। দু’ জায়গায় পড়াতে যায় সে। টাকা ভালই দেয়, নিজের সামান্য হাতখরচ উঠে আসে, সংসারের টুকটাক দরকারে লাগে।

অস্থিরতা বেড়ে গেল তার। রাতে ঘুম হয় না, বাইরে এসে দাঁড়ায়। মাঝরাতে ভেজানো দরজা ঠেলে ঘুমন্ত বাবা-মায়ের মুখ দেখে।  এক একবার মনে হয়, দুটোকেই গলা টিপে চিরদিনের জন্য ঘুম পাড়িয়ে দিলে বেশ হয়। এরাই তার শ্রীহীন চেহারার জন্ম দিয়েছে।  মা-কে যদিও ক্ষমা করা যায়, বাবাকে অসহ্য লাগে। কোনো গুণ নেই। গরিব, ভোঁদাটাইপ পুরুষ।  মেয়েকে ভালো রাখার মুরোদ নেই। বয়স হচ্ছে, এ-বাড়ি সে-বাড়ি পড়ানোর দম ফুরিয়ে আসছে। মেয়েকে সেভাবে খাওয়ানো-পরানোর মুরোদ নেই। মুখে লম্বাচওড়া জ্ঞান দেয় শুধু। দেখলে মনে হবে নেহাতই গোবেচারা, বোকা।  আসল জায়গায় কিন্তু সেয়ানা। এত নাম থাকতে খুঁজে খুঁজে একটি নাম মনে ধরেছিল মেয়ের জন্য। তমসা। যেন বাচ্চা মেয়েটা তার জীবনে ঘোর অন্ধকার এনেছে। সারা পৃথিবীকে লোকটা বুঝিয়ে দিতে চাইল, দেখো, আমার এই মেয়েটাকে দেখো।  ওর মুখের দিকে তাকালে অন্ধকারের অস্তিত্ব টের পাচ্ছি। ঘন রাত্রির অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই মনে হচ্ছে না ওকে।


দেখতে সুন্দর নয়, ফুটফুটে নয় বলে কমবয়সে তাকে আদর করার ইচ্ছে জাগেনি। নিজে আস্ত একটি লোমশ ভালুক, এদিকে সুন্দরের শখ ষোলা আনা। এখন থেকেই মেয়ের রোজগার সংসারের কাজে লাগছে। ক’দিন বাদে মেয়ে দু’বেলা টিউশন না করলে খেতে-পরতে পাবে না। অপদার্থ লোকটার জন্য পাড়ায় সবচেয়ে হতশ্রী বাড়ি তাদের, বাইরেটা প্লাস্টার হয়নি, ইটগুলো হাঁ করে  তাকিয়ে আছে। সবচেয়ে নোংরা আর অগোছালো বাড়িটা তাদের। বাকি বাড়িগুলো সুন্দর, আধুনিক ডিজাইনে তৈরি, জানলায় বাহারি পর্দা ওড়ে, ব্যালকনির নকশা চোখ জুড়িয়ে দেয়। কুশ্রী এই বাড়িটায় থাকলে এমনিতেই মন বিমর্ষ হয়ে যায়।


ইচ্ছেটা আর চেপে রেখে লাভ নেই। এই অপদার্থ লোকটাকে খুন করে ফেলাই ভালো। মা-কে বাঁচিয়ে রেখেই বা কী লাভ? তমসা বালিশের দিকে হাত বাড়াল। 


                                    #

না, শেষপর্যন্ত পারল না সে। হাত কেঁপে গেল, মন বিদ্রোহ করে বসল। খুব ধকল গেল, ঘেমেনেয়ে অস্থির হয়ে গেল তমসা। কী যে করবে ভেবে পাচ্ছে না। ভালো রেজাল্ট করাটা ছিল সমস্তকিছুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, সেখানেও সে পিছিয়ে পড়ছে। এম.এস.সি.-র ফার্স্ট সেমিস্টারে রেজাল্ট মোটেই ভালো হয়নি।  পড়াশোনায় আর আগের মতন মন বসে না।

ডিপার্টমেন্টে একজন গেস্ট লেকচারার এসেছে নতুন। সুকমল দাস। রিসার্চ শেষ করেছে সদ্য, এখনো স্থায়ী কোনো চাকরি জোটেনি। সুকমল দাস-কে নিয়ে ঠাট্টামস্করা চলে খুব। দেখতে অদ্ভূত, রোগা চেহারা, কন্ঠার হাড় দেখা যায়। মেয়েলি গলার স্বর। সুকমল দাস, সংক্ষেপে এস ডি, কিন্তু সবাই তাকে বলে ‘ অর্ধনারীশ্বর’। কেঊ বলে ‘ মশা’, কেউ বলে ‘কমলি’। তার ক্লাসে সবাই উৎপাত করে, পড়া কেউ শুনতে চায় না। তমসা বুঝতে পারে সুকমল দাসের বিষয়ের গভীরে জ্ঞান রয়েছে, শুধু গলার স্বর আর বিসদৃশ চেহারার জন্যই তাকে অধিকাংশ স্টুডেন্ট এত অবজ্ঞা করে। সবার চোখে অবজ্ঞা আর উপহাসের পাত্র বলেই তমসা সুকমলের জন্য একরকম টান অনুভব করে। তার মতোই সুকমলের জন্য জীবন তাচ্ছিল্য বরাদ্দ রেখেছে।

তমসা সুকমল দাসের কাছে মাঝেমধ্যে পড়া বুঝে নেয়। মন দিয়েই তাকে স্টাফরূমে অফটাইমে গাইড করে সুকমল। মেলামেশা বাড়ল, ক্যান্টিনে গল্প এবং বিষয়ের চর্চা শুরু হল।

সাহসী হয়েই তমসা একদিন জিজ্ঞাসা করে বসে, “ সুকমলদা, আপনাকে নিয়ে সবাই এত ঠাট্টা করে বোঝেন না?’’

“জানি। গুরুত্ব দিই না।’’

“খারাপ লাগে না?’’

“পৃথিবীতে কত খারাপ লাগা থাকে। অত গুরুত্ব দিতে নেই।’’

“কখনো খারাপ লাগে না? নিজের ওপর, চারপাশের পৃথিবীর ওপর রাগ হয় না খুব?’’

সু্কমল মাথা নেড়ে বলল, “না।  নিজের কুরূপ নিয়ে মাথা ঘামাই না।  অবজ্ঞা, উপহাস টের পাই। কেয়ারই করি না। আমার কাছে আসল হল কাজ। শেষপর্যন্ত সমাজ তাকেই মনে রাখে যে সমাজকে কিছু দিয়ে যায়। আমার রিসার্চের কাজ খুব প্রশংসা পেয়েছে।  ফ্রান্সের আর জাপানের দুটো বিখ্যাত বোটানিকাল রিসার্চ সেন্টার থেকে পোস্ট-ডক্টরেট করার ডাক এসেছে। এখানে আর বেশিদিন গেস্ট-লেকচারার থাকব না মনে হচ্ছে।’’

“ও!’’

“যারা আমার এই চেহারা নিয়ে উপহাস করে, মেয়েলি গলার কারণে অবহেলা করে তাদের চোখই তৈরি হয়নি।”

“চোখ?’’

“মানুষের ভেতরে যে সুন্দর থাকে তাকে দেখবার জন্য চোখ দরকার পড়ে। সেটা অধিকাংশ লোকের নেই। তারা অবজ্ঞা করলে বয়েই গেছে আমার, বরং আমি তাদের করুণা করি,’’ সুকমল হাসল।

তমসা যেন অনেকদিন পরে প্রাণভরে শ্বাস নিল। সে বলল, “ ঠিকই বলেছেন।’’

“তোমাকে এই দু’মাস কাছ থেকে দেখছি। মন খুলে হাসো না, মুখে কেমন এক বিষণ্ণতা, তোমার সমস্ত অস্তিত্বে যেন প্রাণের সংকট। কী সমস্যা তোমার?’’

তমসা নিজেকে লুকোতে চাইল, “ না, ওরকম আপনার মনে হয়।’’

ইউনিভার্সিটি ক্যান্টিনের পরিধি ছাড়িয়ে কখনো পার্কে, কখনো লাইব্রেরিতে তমসা সুকমলের সঙ্গে সময় কাটাতে লাগল। কিছুটা দূরত্ব রেখেই দু’জনে বসে, গল্প করে, সূর্যাস্ত দেখে। ছায়া ঘনিয়ে আসে, সন্ধ্যা নামে। ঘরে ফিরে ফুলদানিতে ফুল রাখে তমসা। নাহ, সু্কমল দাস তার শরীর স্পর্শ করেনি, চেষ্টাও করেনি। একদিন স্নিগ্ধ সংকোচে বলল, “ আঙুল ধরতে পারি?”

মৃদু হেসে হাত বাড়িয়ে দিল তমসা।


 

                                      #

সুকমল পোস্ট-ডক্টরেট করতে জাপান চলে যাবে। আজকেই শেষবারের মতো ইউনিভার্সিটিতে এসেছে।  ক্যান্টিনে বসেছে দুজন। তমসা কিছুই গোপন রাখেনি। গত একমাসে সে তার নিজের কথা, টানাপোড়েন, এমনকী সুগতর কথাও বলেছে। সুকমল শুনে নরম গলায় বলেছে, “ তাহলে একজনের কাছে যখন কিছুদিনের জন্য স্বীকৃতি পেয়েছিলে চারপাশটা ভালো লাগতে শুরু করেছিল। তাই না?’’

তমসা মুখ নীচু করে বলেছিল, “হ্যাঁ।’’

“তার মানে পৃথিবীতে ভালো দিকও আছে। আমাদের কাজ হল সেই উজ্জ্বল দিকটা খুঁজে নেওয়া।’’

সেই পুরনো প্রসঙ্গ টেনে তমসা জানতে চাইল, “ তুমি তাহলে বিশ্বাস করো যে পৃথিবী আসলে ভালো?’’

সুকমল মৃদু হেসে বলে, “ তা কী আর হয়? খারাপ কতকিছুই আছে, থাকবে। কিন্তু ভালোর অনন্ত প্রবাহও আছে, শেষদিন অব্দি থাকবে। ছোট ছোট স্বীকৃতি আর সাফল্য পেলেই তোমার দেখার চোখ বদলে যাবে, তমসা।”

“সত্যি বলছেন?’’

“আপনির দূরত্বে ছিলাম এতদিন। জাপান যাওয়ার আগে কি একবার ‘তুমি’ বলা যায় না?’’  সুকমল একমুখ হাসি নিয়ে তাকিয়ে থাকল।

তমসা সুকমলের হাত নিজের মুঠোর মধ্যে রেখে বলল, “ তুমি সাবধানে থেকো।’’

“নেক্সট্ পরীক্ষায় তোমাকে কোয়ালিফাই করতে হবেই। মাস্টার্সের পরে তোমার ডেস্টিনেশন হল রিসার্চ। অনলাইনে তোমাকে গাইড করব।  রিসার্চের দরজা খুলে গেলেই দেখবে তোমার নতুন জীবন শুরু হচ্ছে।’’

তমসার ঠোঁট কাঁপল, “সেই নতুন জীবনে তুমি থাকবে?’’ সুকমল চুপ থাকল।

তমসা ধৈর্য হারাচ্ছিল। বাহ, মুখে এখন কথা নেই। তার মানে সুকমলও শেষপর্যন্ত তাকে চায় না। ক্ষোভে চেয়ার ছেড়ে উঠতে যাচ্ছিল তমসা।

সুকমল শান্তভাবে বলল, “ থাকব না কেন? বাকিটা সময়ের ওপর ছেড়ে দেওয়াই ভালো নয় কি?’’

তমসা চেয়ারে বসে তাকাল, “ সময়ের হাতে? কী বলতে চাও তুমি?’’

বিব্রত গলায় সুকমল বলল, “ ভরসা পাই না। মনে হয় দূরে গেলেই ভুলে যাবে।’’

তমসা আশ্বস্ত হয়ে হাসে, “ দেখা যাক। কে কাকে ভুলে যায়? আচ্ছা, তোমাকে কি এয়ারপোর্টে সি-অফ করতে যেতে পারি?’’

সুকমল  চোখে খুশি, “এলে খুশি হব।”

হেঁটে হেঁটে ফিরছিল দু’জন, গল্প করছিল, সুকমল মোড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে পড়ল। মুচকি হেসে বলল, “ কত চারাগাছ বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতে। তোমাকে একটা কিনে দিই।’’

“ কেন?’’

“এমনিই। ইচ্ছে হল।”

সুকমল একটি জুঁইফুলের চারা কিনে তমসার হাতে দিয়ে বলল, “ ছোট উপহার হিসেবে রাখো।’’

সুকমল জাপানে চলে গিয়েছে দু’মাস হল। মাঝেমধ্যে স্কাইপিতে কথা বলে তমসা। জুঁইফুলের চারাটি বাগানের এককোণে লাগিয়েছে তমসা, রোজ জল দেয়, পরিচর্যা করে।

তমসা অপেক্ষায় আছে কখন তা গাছ হয়ে উঠবে, ফুল ফুটবে। অন্ধকার ক্লান্তিকর অলিগলি পেরিয়ে সে উন্মুক্ত আকাশের নীচে অন্তরঙ্গ হাওয়ায় জুঁইফুলের সুরভি মাখতে চায়।

তার বুকের নিভৃত কোণে সুন্দরের স্পর্শ লেগেছে সবে ...


অলঙ্করণঃ ডাঃ সায়ন্ন্যা দাশদত্ত



লেখক পরিচিতি



সুমন মহান্তি কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এম.এ.। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে লেখালেখি শুরু। দেশ, আনন্দবাজার পত্রিকা, বর্তমান, শিলাদিত্য,সানন্দা,তথ্যকেন্দ্র, আজকাল ইত্যাদি পত্রিকায় গল্প প্রকাশিত হয়েছে। এখনো পর্যন্ত চারটি গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।


No comments:

Post a Comment