প্রবন্ধঃ শেষ চিঠিঃ আনন্দ চট্টোপাধ্যায়

শেষ চিঠি 


আনন্দ চট্টোপাধ্যায়



দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক বাধ্যবাধকতার কারণে অক্ষশক্তি অর্থাৎ জার্মানি, ইতালি আর জাপানের সৈনিকদের অসংখ্য বীরত্বের কাহিনিগুলো সেভাবে জনসমক্ষে আসেনি। বেশির ভাগ লেখায়, উপন্যাসে কিংবা হলিউডি সিনেমায় মিত্রপক্ষ মানে আমেরিকা, সোভিয়েত রাশিয়া আর গ্রেট ব্রিটেনের সেনানীদের বীরত্বের কাহিনিগুলোকে অনেক বেশি ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো হয়েছে। আশ্রয় নেয়া হয়েছে অনেক কাল্পনিক চরিত্রের। তাছাড়াও যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অবনতির ভয়ে হেরে যাওয়া দেশগুলির সৈনিকদের অসম সাহসিকতার কাহিনিগুলিকে অনেক সময়ই সেন্সর করে রাখা হয়েছিল। আসলে যে কোনও যুদ্ধেই পরাজিত পক্ষের সেনানীদের বীরত্বের অমর কাহিনিগুলিকে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়। তাই বিশ্বযুদ্ধের শেষে বেশ কয়েকটা ন্যুরেমবার্গ ট্রায়াল বা টোকিও ট্রায়ালে অসংখ্য জার্মান, ইতালিয়ান কিংবা জাপানি সেনানায়কদের প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করা হলেও জাপানের হিরোশিমা আর নাগাসাকিতে এটম বোমা ফেলে কয়েক লক্ষ সাধারণ ও নিরপরাধ মানুষকে মেরে ফেললেও জয়ী পক্ষের কারো কোনও বিচার হয়নি। যাক, সেটা অন্য প্রসঙ্গ।

কিন্তু বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার অনেক পরে বিজিত পক্ষের সেনানীদের বীরত্বের আর আত্মত্যাগের ঘটনাগুলো যখন ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে থাকে তখন সারা দুনিয়াই স্তম্ভিত হয়ে যায়। তার মধ্যে বেশ কিছু রুদ্ধশ্বাস কাহিনি তো শিউরে ওঠার মতো। যেমন জাপানের ইম্পিরিয়াল আর্মির হাজিমে ফুজি আর তার পরিবারের কাহিনি। বেশ কয়েক দশক জাপান সেনা কতৃর্পক্ষ এই ঘটনাটা সামনে আসতে দেননি। কারণ মহাযুদ্ধের শেষ দিকে আমেরিকা আর জাপানের বিতর্কিত কামিকাজে প্যাসিফিক ওয়ার। শেষে ১৯৯০ সালের গোড়ার দিকে হাজিমে ফুজির সাহসিকতা ও তার পরিবারের চরম আত্মত্যাগের এই কাহিনি প্রকাশ করা হয়।


হাজিমে ফুজি

১৯১৫ সালের ৩০শে আগস্ট হাজিমে ফুজির জন্ম হয় জাপানের ইবারাকি অঞ্চলে। তিনি ছিলেন তার সাত ভাই বোনের মধ্যে সবার বড়ো। কলেজ থেকে বেরিয়ে তিনি জাপানের সেনা বাহিনীতে যোগ দেন। সেই সময় চীনের সাথে জাপানের ভয়ঙ্কর যুদ্ধ চলছে। আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার বেশ কিছু আগে থেকেই ১৯৩৭ সালের ৭ই জুলাই থেকে চীনের সাথে জাপানের বিরাট রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম চলছিল। ১৯৪৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২ তারিখে আমেরিকানদের কাছে জাপানের আত্মসমর্পণের শেষ দিন পর্যন্ত এই যুদ্ধ থামেনি। আধুনিক ইতিহাসে এশিয়া মহাদেশে এত দীর্ঘ সামরিক যুদ্ধের আর কোনও নিদর্শন নেই। দুই দেশের প্রায় আড়াই কোটি সাধারণ মানুষ এই ভয়ংকর যুদ্ধে মারা গিয়েছিলেন। চায়না আর জাপান মিলিয়ে চল্লিশ লক্ষের বেশি সৈনিক এই লড়াইয়ে মৃত্যু বরণ করেন।

দক্ষ মেশিন গান চালক হিসাবে হাজিমে ফুজির নাম জাপানের সেনা বাহিনীতে ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। অবিলম্বে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে চীনের সমরাঙ্গনে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু একদিন যুদ্ধক্ষেত্রে মর্টার শেলের আঘাতে তিনি গুরুতর ভাবে জখম হন ও অবিলম্বে তাকে একটা মিলিটারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে বেশ কিছুদিন চিকিৎসা চলার পর তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন কিন্তু তার বাঁ হাতটা অনেকটাই অকেজো হয়ে যায়। হাসপাতালে থাকাকালীন তাকে শুশ্রূষা করেছিলেন জাপানের তাকাসাকি শহর থেকে আসা একজন নার্স। তার নাম ফুকুকো। দুজন ততদিনে পরস্পরকে ভালোবেসে ফেলেছেন। বিয়েও হয়ে গেল। আর দুজনেই জাপানে ফিরে এসে টোকিও শহরে ঘর বাঁধলেন। একটা কথা এখানে বলে নেওয়া ভালো যে সেই সময়ের প্রেক্ষিতে জাপানে নিজেদের পছন্দে বিয়ে করাটা কিন্তু যথেষ্ট সাহসী পদক্ষেপ হিসাবে গণ্য করা হত। বছর দুয়েকের ব্যবধানে দুই কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন ফুকুকো। কাজুকো আর চিকো।

ফুকুকো আর তার কোলে বড়ো মেয়ে তাজুকো

ততদিনে যুদ্ধটা আর চীন আর জাপানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ১৯৪১ সালের ৭ই ডিসেম্বর জাপান আমেরিকার নৌ বন্দর পার্ল হারবার আক্রমণ করলে আমেরিকা জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। তার পরেই জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পুরোপুরি জড়িয়ে যায়।

জাপানের সেনা কর্তারা হাজিমেকে আর চীনের রণাঙ্গনে পাঠালেন না। বরং তাকে আর্মি এয়ার কর্পোরেশন একাডেমিতে ভর্তি করে দেওয়া হল। ১৯৪৩ সালে সেখানে ট্রেনিং শেষ করার পর তাকে টোকিও শহর থেকে অনেক দূরে কুমাগায়া আর্মি এভিয়েশন স্কুলের একজন ট্রেনার হিসাবে নিয়োগ করা হয়। সেখানে তখন বৈমানিকদের যুদ্ধে ব্যবহৃত উড়োজাহাজ চালানোর প্রশিক্ষণ দেয়া হত। এদিকে ১৯৪৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে স্তালিনগ্রাদে জার্মানদের শোচনীয় পরাজয়ের পর অক্ষ শক্তি সব কটা ফ্রন্টেই ক্রমাগত পিছু হটতে আরম্ভ করে আর ১৯৪৪ সালের মধ্যভাগে যুদ্ধের ভাগ্য মোটামুটি ভাবে নির্ধারিত হয়ে যায়। জার্মানদের পতন শুধু তখন সময়ের অপেক্ষা।

জাপান কিন্তু তখনও মিত্র শক্তি, বিশেষ করে আমেরিকার বিরুদ্ধে প্রাণপণে লড়ছে। কিন্তু একটা সময় তাদের যুদ্ধ বিমানের সংখ্যা কমতে থাকে। জাপানে তখন ভয়ানক আর্থিক মন্দা চলছে। উন্নত মানের ফাইটার প্লেন তৈরি করা যাচ্ছে না। এছাড়াও সহযোগী দেশ জার্মানি আর ইতালি থেকে কোনও সাহায্য পাওয়ার আশাও নেই। তারা তখন নিজেদের আত্মরক্ষা করতেই ব্যস্ত। সবচাইতে বড়ো সমস্যা ছিল দক্ষ সৈনিক আর বৈমানিকের অভাব। এদিকে আমেরিকা প্রশান্ত মহাসাগরে প্রচুর যুদ্ধ জাহাজ ভর্তি সৈন্য নিয়ে জাপানকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলতে চাইছে। সেই সমস্ত যুদ্ধ জাহাজগুলো এত বিশাল আর তাদের দেয়াল গুলো এত মোটা ইস্পাত দিয়ে তৈরি ছিল যে সাবমেরিন থেকে টর্পেডো বা জাহাজ থেকে মিসাইল ছুড়ে সেগুলিকে ঘায়েল করা যাচ্ছিল না। কোনও উপায় নেই দেখে জাপান একটা আশ্চর্য রণকৌশল ঠিক করে। অপারেশন ‘কামিকাজে’। এক ভয়ঙ্কর রণনীতি। আজও ভাবলে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। সুইসাইডাল মিশন। আমেরিকান জাহাজগুলির দুর্বল জায়গা ছিল ধোঁয়া বেরোনোর চিমনি। জাপান প্রথমে ওকা ভি ওয়ান আর পরে আরেকটু উন্নত ধরনের ওকা ভি টু বলে এক ধরনের খুব ছোট এরোপ্লেন বানিয়ে ফেলে। এই প্লেন গুলোতে ককপিটে মাত্র একজন মানুষেরই বসার আসন ছিল। প্লেনগুলির সামনের দিকটা দেখতে ছিল অনেকটা চুরুটের মতন আর সম্পূর্ণটাই বারুদে ঠাসা। এগুলিকে সাধারণ যুদ্ধ বিমানের তলায় জুড়ে দেয়া হত। বিপক্ষের যুদ্ধ জাহাজের অনেকটা কাছে এলে ওপরের বিমান থেকে একজন নেমে আসত নিচের ছোট প্লেনটায়। সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৫০০০ ফিট উপরে প্রায় ১ টন বারুদে ঠাসা গ্লাইডার প্লেনগুলোকে লক্ষবস্তু থেকে ৮০ কিলোমিটার দুরে মূল উড়োজাহাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হত। এরপর নিজস্ব গতিতে টার্গেটের থেকে তিন কিলোমিটার দুরে এসে গ্লাইডারের তিনটি রকেট ইঞ্জিন চালু করে ঘন্টায় প্রায় ৯৬০ কিমি গতিতে আত্মঘাতী বৈমানিক প্লেনের মাথাটা একেবারে নিচের দিকে গোত্তা মেরে বিপক্ষের যুদ্ধ জাহাজের চিমনির মুখ লক্ষ্য করে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। শেষ দিকে মার্কিন জাহাজগুলিতে অ্যান্টি এয়ারক্রাফট বসিয়ে কিছু কামিকাজে প্লেনকে আকাশেই ধ্বংস করে ফেললেও বেশির ভাগ গুলোই সঠিক লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম হচ্ছিল। সেই সময় জাপান ওকা ভি টু প্লেনগুলির ককপিটে একজন চালক ছাড়াও এয়ারক্রাফ্টের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্যে একজন করে শুটার বসার ব্যবস্থা করে। এইভাবে যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত জাপানিরা আমেরিকার প্রায় ৩৪টি যুদ্ধ জাহাজকে সম্পূর্ণ ডুবিয়ে দিতে সক্ষম হয়। আমেরিকা ও তার সহযোগী দেশের আরও কয়েকশো জাহাজ প্রচণ্ড ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিপক্ষের প্রায় সাত হাজার নৌবাহিনীর সৈনিকের সলিল সমাধি ঘটেছিল। এই সুইসাইডাল মিশনে জাপানের প্রায় ৩৮০০ বৈমানিক মারা যান।


কামিকাজে আক্রমণ

যাক এবার মূল কাহিনীতে ফিরি। কুমাগায়া আর্মি এভিয়েশন সেন্টারে হাজিমে ফুজি পাইলটদের সময়ানুবর্তিতা আর চারিত্রিক গঠনের ট্রেনিং ক্লাস নিতেন। তখন ১৯৪৪ সালের শেষ দিক। দলে দলে জাপানি যুবকেরা আত্মঘাতী কামিকাজে বৈমানিক বাহিনীতে যোগ দিচ্ছে। আর্মি এভিয়েশন সেন্টারে বসে হাজিমে খবর পাচ্ছেন কীভাবে প্রতিদিন তার অনেক নির্ভীক ছাত্রেরাও কামিকাজে অপারেশনে আত্মঘাতী হচ্ছেন। হাজিমে ফুজি টোকিওতে জাপানের সেনাবাহিনীর প্রধান দফতরে চিঠি পাঠিয়ে জানালেন যে তিনিও এই আত্মঘাতী মিশনে নাম লেখাতে চান। তার আবেদন খারিজ হল। এর প্রধান কারণ ছিল মোটামুটি ভাবে যাদের কোনও পিছুটান নেই তাদেরই এই বাহিনীতে নিয়োগ করা হত। হাজিমে ফুজি দ্বিতীয়বার আবেদন করলেন। এবারও সেটা মঞ্জুর হল না। কর্তৃপক্ষ জানালেন যে তিনি বিবাহিত। স্ত্রী ছাড়াও তার দুই শিশু কন্যা রয়েছে। তাই তাকে কামিকাজে বাহিনীতে নাম লেখাতে দেওয়া যাবে না। হাজিমে ফুজির মন তখন ভেঙে গেছে। এর মধ্যে তিনি মাঝে কয়েকদিনের জন্যে ছুটিতে টোকিওতে তার বাড়িতে ফিরলেন। কিন্তু স্বামীর মনমরা ভাব দেখে স্ত্রী বুঝতে পারলেন যে কোথাও কিছু গণ্ডগোল হয়েছে। অনেকবার জিজ্ঞেস করার পর ব্যাপারটা জানা গেল। সমস্যাটাও বুঝলেন। প্রিয় ছাত্রদের প্রতিদিন মরতে দেখে প্রচণ্ড আত্মগ্লানিতে ভুগছেন স্বামী। ছুটি শেষ হলে কুমাগায়াতে স্বামী ফিরে যাওয়ার সময় স্ত্রী বললেন আরও একবার আবেদন পত্র পাঠাতে। মিথ্যা সান্ত্বনা ভেবে হাজিমে তার ট্রেনিং সেন্টারে ফিরে এলেন।

দিনটা ছিল ১৯৪৪ সালের ১৪ই ডিসেম্বর। টোকিওতে তখন প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়েছে। খুব ভোরে উঠে হাজিমের স্ত্রী ফুকোকো তার সবচাইতে সুন্দর কিমোনোটা গায়ে দিয়ে দুই মেয়েকে নিয়ে কুয়াশার মধ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন। বেলা দশটার সময় টোকিও পুলিশ কাছের আরাকাওয়া নদীর হিমশীতল জল থেকে যখন ফুকুকোর মৃতদেহ উদ্ধার করছে তখনও তার পিঠে এক বছরের শিশু চিকো কাপড় দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে পেঁচানো। আর তিন বছরের কন্যা তাজুকোর হাত দড়ি দিয়ে শক্ত করে নিজের হাতের সাথে বাঁধা। পুলিশ তিনটি মৃতদেহের সাথে একটা সুইসাইডাল নোটও খুঁজে পায়। স্বামীর উদ্দেশে এক দীর্ঘ চিঠি। ফুকুকো লিখে গেছেন তাকে মন খারাপ না করতে। মৃত্যুর পরেও যদি কোনও জীবন থাকে তবে সেখানেও তিনি তার মেয়েদের দেখে রাখবেন। এবার আর কোনও বন্ধন নেই। হাজিমে যেন দেশের জন্যে তার ঈপ্সিত দায়িত্ব পালন করতে এগিয়ে যান। আগের দিন সন্ধ্যায় ফুকুকো তার দিদির কাছেও একটা চিঠি লিখেছিলেন। অনুরোধ করেছিলেন তার মা আর তার অবিবাহিতা ছোট বোনকে দেখাশোনা করার জন্যে।


ফুকুকোর সেই শেষ চিঠি

টেলিগ্রামে খবরটা পেয়ে হাজিমে ফুজি চমকে যান। প্রথমে মানসিক ভাবে প্রচণ্ড ভেঙে পড়লেও কিছুদিন বাদে আবার জাপানের ইম্পিরিয়াল আর্মির সদর দফতরে কামিকাজে পাইলট হিসাবে যোগদানের জন্যে ইচ্ছাপত্র পাঠান। এবার আর তার আবেদন নাকচ হল না। ১৯৪৫ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি হাজিমেকে ক্যামিকাজে শিনবু স্কোয়াড্রনের কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়। ১৯৪৫ সালের ২৮শে মে হাজিমে ফুজির নেতৃত্বে ৯টা যুদ্ধবিমানের একটি দল সূর্য ওঠার অনেক আগে প্রশান্ত মহাসাগরের ওকিনাওয়া দ্বীপের অদূরে মোতায়েন ড্রেক্সলার আর লাউরি নামের দুটো আমেরিকান যুদ্ধ জাহাজকে ধ্বংস করার জন্যে রওয়ানা দেয়। প্রত্যেকটা কামিকাজে প্লেনে একজন করে বৈমানিক আর একজন শুটার ছিলেন। দুটো বিমান আছড়ে পড়ে ড্রেক্সলারের উপর। একটাতে পাইলট ছিলেন হাজিমে ফুজি। ১৫৮ জন নৌসেনা শুদ্ধ ড্রেক্সলার জাহাজ টুকরো টুকরো হয়ে সমুদ্রের জলে তলিয়ে যায়। জীবনের ওপারে স্ত্রী ও দুই মেয়ের সাথে ওঁর কোনওদিন দেখা হয়েছিল কিনা সেটা জানার কোনও উপায় নেই।

ফুকুকোর লেখা সেই চিঠি এখন রাখা আছে জাপানের রাজধানী টোকিও শহরের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এক স্মারক সংগ্রহশালায়। এই লেখার সাথে জাপানি ভাষায় লেখা ফুকুকোর সেই শেষ চিঠির একটা ফটোকপিও দিলাম। হাজিমে ফুজির ছবির সাথে আরেকটা ছবিতে রয়েছে ফুকুকো আর তার কোলে বড়ো মেয়ে তাজুকো।


……………………


No comments:

Post a Comment